ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন/ একাউন্ট খোলার নিয়ম ও সুবিধা

বাংলাদেশের প্রথম আইপি কলিং অ্যাপের নাম হচ্ছে ব্রিলিয়ান্ট। আমরা এই আইপি কলিং অ্যাপের মাধ্যমে স্বল্প খরচে দেশের সকল নাম্বারে কথা বলতে পারি। ব্রিলিয়ান্ট আইপি কলিং অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য আমাদেরকে ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম জানতে হবে। ব্রিলিয়ান্ট একাউন্ট খুলে আমরা সেই অ্যাপ ব্যবহার করে দেশ এবং বিদেশের সকল নাম্বারে স্বল্প খরচে কথা বলতে পারব। 


অনেকেই রয়েছেন যারা ব্রিলিয়ান্ট অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি জানেন না। যদি আপনি ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খোলার উপায় না জানেন তাহলে এই টিউটোরিয়াল আপনার জন্য। কারণ এই পোষ্টে আমি "কিভাবে ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়" তার উপায় দেখাবো। আপনারা ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপে একাউন্ট খুলে স্বল্প খরচে দেশ-বিদেশের সকল নাম্বারে কথা বলতে পারবেন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম জানার আগে ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেয়া যাক। তাহলে এবার ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ কি? ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট বিস্তারিত তথ্যঃ 

ব্রিলিয়ান্ট হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম আইপি কলিং অ্যাপ। ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপের মাধ্যমে স্বল্প খরচে যেকোনো মোবাইল নাম্বারে কথা বলা যায়। মোবাইলের কল রেট বেড়ে গেলে ব্রিলিয়ান্ট সহো অন্যান্য আইপি কলিং অ্যাপ অনেক জনপ্রিয় হয়ে যায়। কারণ সাধারণত যদি আমরা সিম দিয়ে সরাসরি কাউকে কল করি তাহলে প্রতি মিনিটে দুই টাকার বেশি কাটে। 


কিন্তু ব্রিলিয়ান্ট আইপি কল ব্যবহার করলে প্রতি মিনিটে মাত্র ৪৬ পয়সা কাটে। যেহেতু ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপের মাধ্যমে এত কম টাকায় কথা বলা যায় তাই এই অ্যাপ এতো বেশি জনপ্রিয়। তবে আপনার মোবাইলে অবশ্যই ইন্টারনেট সংযোগ ভালো থাকতে হবে। অর্থাৎ আপনার মোবাইলে যদি এমবি না থাকে তাহলে ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন না। 


ইন্টারনেট ব্যবহার করা লাগলেও ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে খুব কম ইন্টারনেট খরচ হয়। আপনারা স্বল্প ইন্টারনেট খরচ করে মাত্র 46 পয়সা মিনিটে ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের যেকোনো মোবাইল নাম্বারে কথা বলতে পারবেন। ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপের মাধ্যমে শুধুমাত্র বাংলাদেশের মোবাইল নাম্বারে নয় বরং বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের মোবাইল নাম্বারে আইপি কলে কথা বলতে পারবেন। এক্ষেত্রে বাইরের দেশের নাম্বারে কথা বলতে চাইলে খরচ একটু বেশি হবে। 


আরো পড়ুনঃ ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে এনআইডি (NID) ভেরিফিকেশন করার নিয়ম


ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপের সুবিধাঃ 

ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপের সুবিধা অনেক। এই অ্যাপের সুবিধাগুলো হচ্ছে- 


  • প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করলে পাবেন নিজস্ব ১১ ডিজিটের একটি ব্রিলিয়ান্ট নাম্বার। এই নাম্বার শুরু হবে ০৯৬৩৮ দিয়ে। 

  • আলদা ফোন নম্বার দেয়ার ফলে নিজের মোবাইল নাম্বার হাইড করে কল বা মেসেজ করা যাবে। 

  • ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপস এর মাধ্যমে দেশ অথবা বিদেশের যেকোনো মোবাইল এবং ল্যান্ডফোন নাম্বারে কল করা যাবে। 

  • Brilliant থেকে অন্য লোকাল অপারেটরে (মোবাইল / পিএসটিএন) ভ্যাট সহ কল ট্যারিফঃ ৪৬ পয়সা / মিনিট (১ সেকেন্ড পালস) 

  • Brilliant থেকে বাংলাদেশের যে কোন আই পি টেলিফোনি নম্বর (০৯৬***) কল ট্যারিফঃ ফ্রি 

  • Brilliant থেকে বিদেশ এর যে কোনো নম্বর এ কল ট্যারিফঃ সরকার অনুমোদিত চার্জ প্রযোজ্য (১৫ সেকেন্ড পালস) + ১৫% ভ্যাট। 

  • ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ এর মাধ্যমে আরেকজন ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ ব্যবহারকারীকে সম্পূর্ণ ফ্রিতেই কল এবং মেসেজ করা যায়। 

  • এখান থেকে ফ্রিতে অডিও, ভিডিও, লোকেশন, ফাইলস, ভয়েস, ফটো সব কিছু পাঠাতে পারবেন। 

  • আপনারা কয়েকজন একসাথে মিলে গ্রুপ চ্যাটিং করতে পারবেন। 

  • ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ বাংলা ভাষা সাপোর্ট করে। 

  • ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ হচ্ছে ১০০% এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন যুক্ত নিরাপদ চ্যাটিং। 


এই ছিলো ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপের সুবিধা। আপনারা যদি ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ ব্যবহার করেন তাহলে সল্প ইন্টারনেট খরচ করেই উপরিউক্ত সুবিধাগুলো পাবেন। তবে মনে রাখবেন ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ ব্যবহার করে যেকোনো লেকাল নাম্বারে ফোন করা গেলেও যেকোনো লোকাল নাম্বারে মেসেজ পাঠাতে পারবেন না। তবে, ব্রিলিয়ান্ট নম্বার থেকে ব্রিলিয়ান্ট নাম্বারে এসএমএস (SMS) পাঠাতে পারবেন। 


আরো পড়ুনঃ ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রিচার্জ করার নিয়ম


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন/ একাউন্ট খোলার নিয়মঃ 

ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম অনেক সহজ। আপনারা খুব সহজেই ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এই কাজের জন্য আপনার মোবাইলে ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপ লাগবে। 


আপনারা প্লে স্টোরে গিয়ে Brilliant লিখে সার্চ করে নিচের স্ক্রিনশট দেখানো ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ ইন্সটল করে নিবেন। অথবা Brilliant Connect এই লিংকে প্রবেশ করে সরাসরি প্লে স্টোর থেকে ইনস্টল করে নেবেন। অতঃপর এই অ্যাপ ওপেন করবেন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ ওপেন করার পর নিচের স্ক্রিনশট দেখানো আইকনে ক্লিক করে সবগুলো পেজ কেটে দিবেন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


এবার নিচের স্ক্রিনশটএর মতো আপনার দেশ সিলেক্ট করতে হবে। আপনারা বাংলাদেশ সিলেক্ট করে আপনার মোবাইল নাম্বার দিয়ে Continue অপশনে ক্লিক করবেন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


এবার নিচের স্ক্রিনশটএর মতো আপনার দেয়া মোবাইল নাম্বার কনফার্ম করতে হবে। নাম্বারটি সঠিক রয়েছে কিনা দেখে Confirm অপশনে ক্লিক করবেন। আর যদি ভুল হয় তাহলে Edit Number অপশনে ক্লিক করে ঠিক করবেন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


আপনার দেয়া মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনার মোবাইলের একটি কোড পাঠিয়ে দিবে। নিচের স্ক্রিনশটএর মতো আপনার মোবাইলে আশা কোড কপি করে নিচের স্ক্রিনশট দেখানো বক্সে দিয়ে আপনার মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করবেন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


এবার আপনারা নিচের স্ক্রিনশটএর মতো Access to Contacts নামে একটি অপশন দেখতে পারবেন। এই অপশন চালু করলে আপনার মোবাইলে সেভ থাকা নাম্বারে যারা যারা ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপ ব্যবহার করে তাদের ব্রিলিয়ান্ট অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমি Continue করতেছি- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


এবার আপনারা Storage permission অপশন দেখতে পারবেন। আপনারা Continue করে দিবেন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


এবার আপনারা নিচের স্ক্রিনশটএর মতো আপনার প্রোফাইল দেখতে পারবেন। এখানে আপনার নাম এবং ছবি দিয়ে Continue অপশনে ক্লিক করবেন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


অতঃপর ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপে একাউন্ট খোলার কাজ শেষ। এবার আপনারা নিচের স্ক্রিনশটএর মতো ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপের হোম পেজ দেখতে পারবেন- 


ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম


এই ছিলো ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম। আপনারা উপরে দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এরপর ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট অ্যাপ চালু করার জন্য আপনাকে NID ভেরিফিকেশন করতে হবে। 


এনআইডি ভেরিফিকেশন করার পর দেশের সকল নাম্বারে কথা বলার জন্য রিচার্জ করতে হবে। অর্থাৎ ব্রিলিয়ান্ট কনেক্ট অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে NID ভেরিফিকেশন করার পরে টাকা রিচার্জ করলে সকল নাম্বারে কথা বলতে পারবেন। 


পরিশেষে বলতে চাচ্ছিঃ 

ব্রিলিয়ান্ট অ্যাপে একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে এই টিউটোরিয়াল আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে এবং কাজে আসবে। যদি এই পোস্ট আপনাদের ভালো লাগে এবং কাজে আসে তাহলে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। এছাড়াও যদি আপনাদের কোথাও বুঝতে সমস্যা হয় অথবা ব্রিলিয়ান্ট কানেক্ট রেজিস্ট্রেশন করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আরো কিছু জানতে চান তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন। তবে এরকম সকল নতুন পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকতে ভুলবেন না। 

Share This Article On:

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url