ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার সকল উপায় (নিরাপদ ও হ্যাকিং মুক্ত রাখুন)

বর্তমানে ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার সমস্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের প্রায় সকলের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ফেসবুক একাউন্টে আমাদের ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যবলি থাকায় সেই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অবশ্যই নিরাপদ রাখতে হবে। ফেসবুক একাউন্ট নিরাপদ না রাখলে হ্যাকাররা সহজে আমাদের ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক করতে পারে। কিন্তু অনেকেই রয়েছেন যারা ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায় জানেনা। 


যদি আপনি ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার নিয়ম না জানেন তাহলে এই টিউটোরিয়াল আপনার জন্য। কারণ এই পোস্টে আমি ফেসবুক একাউন্ট নিরাপদ রাখার সকল উপায় দেখাবো। আপনারা কিভাবে ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখা যায় সেগুলো জানার মাধ্যমে আপনার ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে পারবেন। এতে আপনার ফেসবুক আইডি থাকবে নিরাপদ এবং হ্যাকারাও কখনো ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে পারবেনা। তাহলে এবার ফেসবুক একাউন্ট নিরাপদে রাখার সকল উপায় জেনে নিন- 


ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়
ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়


কেন আপনার ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখবেন? 

আমাদের ফেসবুক আইডিতে পার্সোনাল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী থাকে। এই পার্সোনাল বিষয়গুলোর নিরাপত্তার জন্য আমাদের ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে হবে। আমাদের ফেসবুক আইডি যদি নিরাপদ না থাকে তাহলে হ্যাকাররা ফেসবুক আইডি হ্যাক করে আমাদের সর্বনাশ করে দিতে পারে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন প্রায় ছয় লাখ ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হচ্ছে। 


এখন আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে আপনি তো কোন সেলিব্রেটি নন তাহলে আপনার ফেসবুক আইডি কেন হ্যাক করবে? ফেসবুক আইডি হ্যাকাররা শুধুমাত্র সেলিব্রেটিদের নয় বরং সাধারণ মানুষদেরও হ্যাক করে থাকে। আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে হ্যাকাররা মূলত আপনার কাছে বড় ধরনের অ্যামাউন্ট অর্থাৎ টাকা চাইতে পারে। 


এছাড়াও আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করে আরো অনেক কিছু চাইতে পারে। যদি আপনি হ্যাকারের চাওয়া জিনিসগুলো না দেন তাহলে হ্যাকাররা আপনার পার্সোনাল তথ্যাবলি ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে। এতে আপনি অনেক বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এই কারণে আমাদের পার্সোনাল বিষয়গুলোর নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে হবে। 


ফেসবুক আইডি হ্যাক কেনো হয়? 

আমাদের ভুলের কারণেই ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে থাকে। সাধারণত আমরা হ্যাকারের ফাঁদে পা দেই যার কারণে হ্যাকাররা খুব সহজেই আমাদের ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে পারে। কিন্তু যদি আমরা আমাদের ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখি এবং হ্যাকারের ফাঁদে পা না দেই তাহলে হ্যাকাররা কখনো আমাদের ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে পারবেনা। ফেসবুক আইডি নিরাপদে রাখার জন্য কখনোই আমাদেরকে হ্যাকারের ফাঁদে পা দেয়া যাবেনা। নিম্নে ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার সকল উপায় দেয়া হলো- 


আরো পড়ুনঃ ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে বোঝার উপায়


ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায়ঃ 

আশা করছি আপনারা ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার গুরুত্ব জানতে পেরেছেন। এখন আপনি নিশ্চই ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায় জানতে চাচ্ছেন। তবে বলে রাখছি ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার পদ্ধতি অনেক সহজ। আপনারা অল্প কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখার মাধ্যমে আপনার ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে পারবেন। 


নিম্নে ফেসবুক আইডি নিরাপদে রাখার সকল উপায় দেয়া হলো। আপনারা নিচে দেয়া ধাপগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনার ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে পারবেন। তাহলে এবার ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার সকল উপায়গুলো জেনে নিন- 


ফেসবুক আইডিতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাঃ 

ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই ফেসবুক আইডিতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। ফেসবুকে সাধারণ পাসওয়ার্ড ব্যবহারের ফলে অধিকাংশ মানুষের ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে থাকে। আপনি এমন কোন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না যেটা অন্য কেউ অনুমান করতে পারে। যেমন আপনার নামের সাথে কোন সংখ্যা। 


অর্থাৎ আপনার নাম, জন্মদিন, বিশেষ জায়গার নাম, প্রিয় খেলোয়াড়ের নাম, প্রিয় দলের নাম, প্রিয় মানুষের নাম এগুলো কমন জিনিস কখনো ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন না। এতে যে কেউ আপনার ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড অনুমান করে আপনার ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করতে পারবে। আপনারা পাসওয়ার্ড হিসেবে ইংরেজিতে ছোট ও বড় হাতের অক্ষর, গানিতিক সংখ্যা এবং সিম্বল ব্যবহার করবেন। 


অর্থাৎ UniVersity&$@91647 এরকম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন। আপনারা উক্ত পাসওয়ার্ডটি লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন সেখানে ইংরেজিতে ছোট হাতের ও বড় হাতের অক্ষরের মিশ্রন রয়েছে। এছাড়াও সিম্বল এবং শেষে গাণিতিক সংখ্যার ব্যবহার করা হয়েছে। আপনারা যদি এরকম সাতমিশালি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন তাহলে আপনার পাসওয়ার্ড কেউ অনুমান করতে পারবেনা এবং আপনার ফেসবুক আইডি হবে নিরাপদ। 


ফেসবুক ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক থেকে দূরে থাকাঃ 

হ্যাকার ফেসবুক আইডি হ্যাক করার জন্য অনেক সময় ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক করে থাকে। ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক হচ্ছে এমন একটি সিস্টেম যেখানে লক্ষ লক্ষ পাসওয়ার্ড থাকে। যখন হ্যাকার কোনো ফেসবুক আইডি টার্গেট করে সেখানে ব্রুট ফোর্স এটাক করে তখন ব্রুট ফোর্সে থাকা লক্ষ লক্ষ পাসওয়ার্ড এর মধ্যে যদি কোনো পাসওয়ার্ড সেই ফেসবুক আইডির মধ্যে মিলে যায় তাহলে অটোমেটিক সেই ফেসবুক আইডিতে হ্যাকাররা লগইন করতে পারে। 


এই কারণে ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক থেকে বাঁচার জন্য আপনার ফেসবুক আইডিতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। যদি আপনি নরমাল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন তাহলে ব্রুট ফোর্স এর সাথে আপনার পাসওয়ার্ড মিল থাকবে এবং অটোমেটিক হ্যাকার রা ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক করে আপনার ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করতে পারবে। 


আপনারা উপরে দেখানো নিয়ম অনুযায়ী ছোট হাতের, বড় হাতের ইংরেজি অক্ষর, গাণিতিক সংখ্যা ও সিম্বল ব্যবহার করে ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড রাখবেন। এতে আপনার ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড ব্রুট ফোর্সে থাকা লক্ষ লক্ষ পাসওয়ার্ডের সাথে মিলবেনা এবং আপনার ফেসবুক আইডি কেউ ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক করলেও হ্যাক হবেনা। এভাবে আপনার ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে পারবেন। 


ফেসবুক আইডিতে সকল তথ্য সঠিক দেয়াঃ 

ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে ফেসবুক আইডিতে সকল তথ্য সঠিক দেয়া। অনেকেই ফেসবুক আইডিতে সঠিক তথ্য না দিয়েই ব্যবহার করে থাকে। যেমন নামের জায়গায় নিজের নাম না দিয়ে নাম রাখে - রাতের পরী, স্মার্ট ছেলে, ইত্যাদি। এছাড়াও প্রোফাইল পিকচারের জায়গায় নিজের ছবি না দিয়ে কোনো সেলিব্রেটি, ফুলের ইত্যাদি ছবি দিয়ে থাকে। 


যদি আপনি এরকম ফেসবুক আইডিতে নিজের নাম এবং ছবি ব্যবহার না করেন তাহলে আপনার ফেসবুক আইডি হবে অনিরাপদ। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার ফেসবুক আইডি ফেক মনে করে ডিজেবল করে দিতে পারে। আর যদি আপনার এরকম কোন ফেসবুক আইডি ডিজেবল হয় তাহলে আপনি সেই ফেসবুক আইডি ঠিক করতে পারবেন না। 


কারণ সেই নাম ও ছবি মিল রেখে এনআইডি কার্ড না হওয়ায় আপনার ফেসবুক আইডি ঠিক হবেনা। এই কারণে সব সময় আপনার ফেসবুক আইডিতে নিজের নাম, ছবি এবং জন্ম তারিখ ব্যবহার করবেন। যদি কখনো এরকম রিয়েল ফেসবুক আইডি নষ্ট হয় তাহলে আপনি নিজের এনআইডি কার্ড অথবা অন্যান্য ডকুমেন্ট দিয়ে আপনার ফেসবুক আইডি ঠিক করতে পারবেন। 


টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু রাখাঃ 

ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার জন্য টু স্টেপ ভেরিফিকেশন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। টু স্টেপ ভেরিফিকেশন যদি চালু করেন তাহলে আপনার ফেসবুক আইডিতে লগইন করার সময় আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি ওটিপি (One time password) কোড যাবে। আপনি সেই ওটিপি কোড দিয়ে আপনার ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করতে পারবেন। 


এখানে টু স্টেপ ভেরিফিকেশনের সুবিধা হচ্ছে যদি কেউ আপনার ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড জানে তারপরেও আপনার ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করতে পারবেনা। কারণ টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকার কারণে যখন কেউ আপনার ফেসবুক আইডির নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করবে তখন আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি ওটিপি কোড চলে আসবে। 


যেটা সেই ব্যক্তি না জানার ফলে আপনার ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করতে পারবেনা। এছাড়াও যদি আপনার মোবাইলে হুট করে টু স্টেপ ভেরিফিকেশনের কোড আসে তাহলে বুঝবেন আপনার ফেসবুক আইডিতে কেউ প্রবেশ করার চেষ্টা করতেছে। তখন আপনি ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড রাখবেন। এভাবে আপনারা টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু রাখার মাধ্যমে ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে পারবেন। 


অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে পারমিশন দিতে সতর্ক থাকাঃ 

অনেক সময় আমরা নিজেরাই হ্যাকারকে আমাদের ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে সহযোগিতা করে থাকি। আপনি হয়তো অবাক হয়ে ভাবছেন এটা কিভাবে সম্ভব? এটি সম্ভব এবং আমরা নিজেরাই করে থাকি। অনেক সময় আমরা থার্ড পার্টি অ্যাপ অথবা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে থাকি যেগুলো মূলত হ্যাকাররা অন্যের তথ্য হ্যাক করার জন্য তৈরি করে। 


অ্যাপ ইন্সটল করার সময় আমরা এটাও লক্ষ্য করিনা যে আমরা কি কি পারমিশন দিচ্ছি। আমরা চোখ বন্ধ করে অ্যাপ ইন্সটল করার সময় সকল পারমিশন দিয়ে থাকে। হ্যাকাররা ইন্টারনেটে অনেক লোভনীয় অ্যাপ সাজিয়ে রেখেছে। যদি আপনি হ্যাকারের তৈরি করা সেই অ্যাপ লোভে পড়ে ডাউনলোড করে সকল পারমিশন দিয়ে ব্যবহার করেন তাহলে আপনার মোবাইলে থাকা মেসেজ, ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড, নাম্বার সবকিছুই হ্যাকারের কাছে চলে যাবে। 


এই কারণে থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করার পূর্বে সাবধানে থাকবেন। যদি এরকম কোনো অ্যাপ ব্যবহার করতেই হয় তাহলে সেই অ্যাপ স্ক্যান করে অথবা আগে কেউ সেই অ্যাপ ব্যবহার করলে তার কাছ থেকে অ্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে ব্যবহার করবেন। এতে আপনার facebook আইডি এবং অন্যান্য সকল একাউন্ট নিরাপদ থাকবে। 


অচেনা অজানা লিংকে ক্লিক না করাঃ 

ফেসবুক আইডি নিরাপদে রাখার জন্য আপনি কখনো অচেনা অজানা লিংকে ক্লিক করবেন না। হ্যাকাররা আপনার ফেসবুক আইডিতে লোভনীয় মেসেজ পাঠিয়ে লিংক দিতে পারে। হতে পারে আপনি সেই লিংকে ক্লিক করলে হ্যাকাররা সেখান থেকে আপনার অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারে। 


এতে সেই প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো পেয়ে হ্যাকাররা আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে পারে। এই কারণে অচেনা লিংকে ক্লিক করার আগে সতর্ক থাকবেন। প্রয়োজনে আপনারা যে কোন ব্রাউজারের incognito mode অপশন থেকে সেই লিংক ব্রাউজ করে দেখতে পারেন যে সেটা কিসের লিংক ছিল। এতে আপনার কোনো সমস্যা হবে না। কারণ incognito mode অপশনে সকল ইনফরমেশন গোপন থাকে। 


ফেসবুক লগিন ইনফরমেশন হাইড রাখাঃ 

ফেসবুক আইডির নিরাপত্তার জন্য লগইন ইনফরমেশন হাইড রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। লগিন ইনফরমেশন বলতে আপনার ফেসবুক আইডির ইমেইল এবং নাম্বার। অর্থাৎ আপনি যেটি ব্যবহার করে আপনার ফেসবুক আইডিতে লগইন করেন সেটি হচ্ছে লগইন ইনফরমেশন। যদি আপনি মোবাইল নাম্বার দিয়ে ফেসবুক আইডিতে লগইন করেন তাহলে সেই মোবাইল নাম্বার আর যদি ইমেইল দিয়ে লগইন করেন তাহলে ইমেইল এর প্রাইভেসি আনলি-মি করে রাখবেন। 


এতে আপনার ফেসবুক আইডির নাম্বার এবং ইমেইল আপনি ছাড়া কেউ দেখতে পারবেনা। এতে হ্যাকাররাও অনুমান করতে পারবেনা আপনি কোন নাম্বার এবং ইমেইল ব্যবহার করে ফেসবুক আইডি লগইন করেন। এভাবে লগ ইনফরমেশন হাইড রেখে আপনার ফেসবুক আইডির নিরাপত্তা বাড়াতে পারবেন। 


পূর্বের সকল ডিভাইস থেকে ফেসবুক আইডি লগ আউট করাঃ 

আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ডিভাইস থেকে আমাদের ফেসবুক আইডি লগইন করে থাকি। আপনি বর্তমানে যে ডিভাইস ব্যবহার করেছেন সেই ডিভাইস ব্যতীত যদি অন্য কোন ডিভাইসে আপনার ফেসবুক আইডি লগইন থাকে তাহলে সেইসব ডিভাইস থেকে আপনার ফেসবুক আইডি লগআউট করে দিবেন। যেমন মনে করুন আপনি আগে আপনার বন্ধুর মোবাইলে ফেসবুক আইডি লগইন করেছিলেন। 


এখন যদি আপনি আপনার বন্ধুর মোবাইল থেকে আপনার ফেসবুক আইডি লগআউট করতে ভুলে যান তাহলে আপনার বন্ধু চাইলে আপনার ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করতে পারবে। এখন মনে করুন আপনার বন্ধু অনেক দূরে আছে। তাহলে কিভাবে আপনার বন্ধুর মোবাইল থেকে আপনার ফেসবুক আইডি লগ আউট করবেন? 


আপনি চাইলে আপনার মোবাইল দিয়েই আপনার বন্ধুসহ সকল ডিভাইস থেকে আপনার ফেসবুক আইডি লগ আউট করতে পারবেন। এর জন্য ফেসবুকের সেটিং অপশনে প্রবেশ করে Where you're logged in অপশনে আপনার ফেসবুক আইডি লগইন করা সকল ডিভাইসের নাম দেখতে পারবেন। এখানে অপরিচিত সকল ডিভাইস থেকেই আপনার ফেসবুক আইডি লগ আউট করে দিবেন। 


অন্যের ডিভাইসে ফেসবুক লগইন ইনফরমেশন সেভ না রাখাঃ 

আপনি লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন যখন আমরা প্রথমবার কোনো ব্রাউজার বা অ্যাপে ফেসবুক আইডি লগইন করি তখন লগইন ইনফরমেশন সেভ রাখতে বলে। যদি আমরা লগইন ইনফরমেশন সেভ করে রাখি তাহলে পরবর্তীতে সেই ডিভাইসে পাসওয়ার্ড না দিয়েই ফেসবুকে প্রবেশ করা যাবে। যদি আপনার নিজের মোবাইল হয় তাহলে আপনি ফেসবুক লগ ইনফরমেশন সেভ করে রাখতে পারেন। 


কিন্তু যদি আপনি অন্যের মোবাইলে ফেসবুক আইডি ব্যবহার করেন তাহলে কখনোই লগইন ইনফরমেশন সেভ করে রাখবেন না। কারণ পরবর্তীতে চাইলে সেই মোবাইলের মালিক আপনার ফেসবুক আইডিতে প্রবেশ করতে পারবে। যদি আপনি লগ আউটও করে দেন তারপরেও লগিন ইনফরমেশন সেভ থাকার ফলে সে আপনার ফেসবুক আইডির নাম্বার ও পাসওয়ার্ড জানতে পারবে। এই কারণে অন্যের ডিভাইসে ফেসবুকের লগিন ইনফর্মেশন সেভ করে রাখবেন না। 


ফিশিং লিংক থেকে দূরে থাকাঃ 

বর্তমানে ফিশিং লিংক এর মাধ্যমে সবথেকে বেশি ফেসবুক আইডি হ্যাক হচ্ছে। হ্যাকাররা ফিসিং লিং তৈরি করে লোভনীয় এসএমএসের মাধ্যমে অন্যকে পাঠায়। অতঃপর যখন কেউ সেই লিংকে ক্লিক করে ফেসবুক আইডির নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দেয় তখন সেই হ্যাকার নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড পেয়ে আইডি হ্যাক করে থাকে। 


ফিশিং লিংক হচ্ছে মনে করুন আপনাকে কেউ বলল যে এই লিংকে ক্লিক করলে অটো লাইক, কমেন্ট বা ফ্রি ইন্টারনেট চালাতে পারবেন। আপনি সত্যি মনে করে যদি সেই লিংকে ক্লিক করেন তাহলে দেখবেন ফেসবুক লগইন পেজের মত হুবহু একটি পেজ এসেছে। তখন আপনি হয়তো মনে করতে পারেন আপনার ফেসবুক আইডি হয়তো লগ আউট হয়ে গিয়েছে এখন লগইন করতে হবে। 


এটি মনে করে যখন আপনার ফেসবুক আইডি নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড সেখানে দেবেন তখন হ্যাকার সেই নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দেখতে পারবে। এভাবে হ্যাকাররা ফিসিং লিংক পাঠিয়ে মানুষকে বোকা বানিয়ে তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে থাকে। এই কারণে যখন আপনি ফেসবুকে লগইন করবেন তখন অবশ্যই সেই লগইন পেজের লিংক চেক করে দেখবেন। 


ফেসবুক পেজের লগইন লিংক শুরুতে www.facebook.com এরকম থাকবে। কিন্তু ফিশিং পেজের লিংক এমন ভাবে তৈরি করা হয় মানুষ বোঝেনা। যেমন - www.facebok.com অথবা www.faceboook.com এরকম। আপনি এই দুটো লিংক দেখলে সহজে বুঝতেই পারবেন না এগুলো আসল ফেসবুকের লিংক নয়। 


এভাবে প্রতারণা শিকার হয়ে অনেকেই ফিশিং লিংক এর মাধ্যমে তাদের ফেসবুক আইডি হারাচ্ছে। এই কারণে কখনো ইনবক্সে দেয়া কারো লিংকে ক্লিক করে যদি দেখেন ফেসবুক আইডির লগইন পেজের মত তাহলে কখনো সেখানে নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করবেন না। এছাড়াও যে কোন জায়গায় ফেসবুক আইডি লগইন করার সময় লগইন পেজের লিংক ভালো করে যাচাই-বাছাই করে নিবেন। 


এছাড়াও যদি আপনার ফেসবুক আইডিতে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকে তাহলে আপনি ফিশিং লিংকে ক্লিক করে লগইন করলেও আপনার ফেসবুক আইডিতে হ্যাকার প্রবেশ করতে পারবেনা। কারণ যখন হ্যাকার আপনার নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে যাবে তখন আপনার মোবাইলে ওটিপি কোড আসবে। হ্যাকার সেটা না জানায় আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে পারবেনা। এভাবে আপনারা ফেসবুক ফিশিং লিংক থেকে নিরাপদ থাকতে পারবেন। 


ফেসবুক আইডি ভেরিফাই করাঃ‌ 

আপনারা চাইলে আপনার ফেসবুক আইডি রানিং ভেরিফিকেশন করতে পারবেন। যদি আপনার এনআইডি কার্ড বা অন্যান্য ডকুমেন্ট দিয়ে আপনার ফেসবুক আইডি ভেরিফাই করে রাখেন তাহলে সেই ফেসবুক আইডি নিরাপদ হবে। 


পরবর্তীতে যদি আপনার আইডির কোন সমস্যা হয় তাহলে ভেরিফাই করা এনআইডি কার্ড অথবা অন্য যে ডকুমেন্ট দিয়ে ফেসবুক আইডি ভেরিফাই করেছিলেন সেই ডকুমেন্ট দিয়ে আপনার ফেসবুক আইডি খুব সহজেই ঠিক করতে পারবেন। যদি ফেসবুক আইডি ভেরিফাই করার নিয়ম না জানেন তাহলে নিচের পোস্ট থেকে জেনে নিন- 


আরো পড়ুনঃ ফেসবুক আইডি রানিং ভেরিফাই করার নিয়ম


এই ছিল ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার সকল উপায়। উপরে ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার সকল নিয়মাবলী দেয়া হয়েছে। আপনারা উপরে দেয়া ধাপগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনার ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখতে পারবেন। এতে আপনার ফেসবুক আইডি হবে নিরাপদ এবং হ্যাকার কখনো আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে পারবেনা। 


আরো পড়ুনঃ ফেসবুক আইডি রিপোর্ট থেকে বাচার উপায়


পরিশেষে বলতে চাচ্ছিঃ

ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার উপায় নিয়ে এই টিউটোরিয়াল আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে এবং কাজে আসবে। যদি এই পোস্ট আপনাদের ভাল লাগে এবং কাজে আসে তাহলে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। এছাড়াও যদি আপনাদের কোথাও বুঝতে সমস্যা হয় অথবা ফেসবুক আইডি নিরাপদ রাখার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আরো কিছু জানতে চান তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন। তবে এরকম সকল নতুন পোস্টের আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে পাশে থাকতে ভুলবেন না। 

Share This Article On:

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url